আইবিএস (IBS) কি ? কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম পেটের একটি প্রচলিত এবং বিরক্তিকর সমস্যা, যা অনেকের জীবনে দীর্ঘমেয়াদী কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের আশেপাশে অনেকেই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং প্রায়ই চিকিৎসা পরিবর্তন করেন, এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায়। কিন্তু, রোগটির প্রকৃতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকলে এটি মোকাবিলা করা সহজ হয়ে যায়।

আইবিএস (IBS) কি ? কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

আইবিএস (IBS) কি ? কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

আইবিএসের লক্ষণসমূহ:
আইবিএসের লক্ষণ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে সাধারণত নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো দেখা যায়:

পেটে ব্যথা: পেটের নিচের অংশে অস্বস্তি বা ব্যথা হতে পারে, যা সাধারণত মলত্যাগের পর কমে যায়।
পেট ফাঁপা এবং গ্যাস: পেটে ফাঁপা ভাব এবং অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হওয়া।
কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া: কিছু ক্ষেত্রে রোগীরা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন, আবার কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে এই দুই সমস্যা একসাথে দেখা দিতে পারে।
ঘুমের সমস্যা: আইবিএসের কারণে কিছু মানুষের ঘুমের সমস্যাও হতে পারে।

 

কীভাবে বুঝবেন আপনার আইবিএস আছে:
আইবিএসের প্রধান লক্ষণ হলো পেটে ব্যথা এবং মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন। এই রোগে সাধারণত ওজন কমে না, জ্বর হয় না, রক্তশূন্যতা দেখা দেয় না, এবং মলের সঙ্গে রক্তপাত হয় না। তবে, কিছু খাবার খেলে লক্ষণগুলো বাড়তে পারে। দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, মাংস , শাকসবজি এবং সালাদের মতো খাবার প্রায়ই সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে।

আইবিএসের প্রতিকার:

নিচে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো যা আইবিএস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে:

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন: যেসব খাবারে সমস্যা বাড়ে, সেগুলো এড়িয়ে চলুন। দুধ, শাকসবজি, অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত মসলা, বেকারি পণ্য, কৃত্রিম চিনি, এবং ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা ভালো।
নিয়মিত ব্যায়াম: হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়াম করতে পারেন, যা পেটের গ্যাস এবং ফাঁপাভাব কমাতে সহায়ক।
অল্প পরিমাণে এবং নিয়মিত খাবার গ্রহণ: একসঙ্গে বেশি না খেয়ে সারাদিনে ছোট ছোট পরিমাণে খাবার খান। খাবারের সময়সূচি বজায় রাখুন।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা অন্যান্য মানসিক চাপ কমানোর কৌশল প্রয়োগ করতে পারেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।


তালবিনা: একটি প্রাকৃতিক উপায় আইবিএস থেকে ভ সুস্থ থাকারঃ
তালবিনা হলো রাসুল (সাঃ) এর সুন্নতি খাবার, যা যবের ছাতু, মধু এবং দুধের সমন্বয়ে তৈরি। এটি কেবল একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার নয়, বরং পুষ্টির এক অমূল্য ভাণ্ডার। নিয়মিত তালবিনা খাওয়ার মাধ্যমে আপনি পেতে পারেন অসাধারণ স্বাস্থ্য সুবিধা। কারণ, তালবিনায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফাইবার মলকে নরম করতে এবং মলত্যাগ সহজ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, তালবিনায় থাকা প্রোবায়োটিকগুলি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং পেটের স্বাস্থ্যের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করে।

তালবিনা খাওয়ার নিয়ম: আপনি দিনের যেকোনো সময় তালবিনা খেতে পারেন। সকালে খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে এটি গ্রহণ করা ভালো। ১ গ্লাস দুধ বা পানির মধ্যে ২ থেকে ৩ চা-চামচ যবের ছাতু এবং মধু মিশিয়ে এটি তৈরি করা হয়। নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনার আইবিএসের ঝুঁকি কমাতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

আইবিএস একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হলেও, সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর ও শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন করলে আপনি ভালো থাকতে পারবেন। তাই, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, নিয়মিত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আইবিএস থেকে মুক্তি পেতে চেষ্টা করুন।

Related Posts

Shopping cart
Sign in

No account yet?

Start typing to see products you are looking for.
Shop
0 Wishlist
0 items Cart
My account