Blog
বিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথা ও তার কারণ এবং প্রতিরোধের জন্য সহজ কিছু টিপস
আমরা কম বেশি সবাই মাথাব্যথায় ভূগে থাকি। যদিও এটি মারাত্মক কোন রোগ নয় তবে ধরন অনুযায়ী এর নির্দিষ্ট কিছু কারন রয়েছে। এর জন্য সচেতন থাকাটাই সবচেয়ে কার্যকরি এবং কিছু নিয়ম কানুন ও খাদ্যাভাস মেনে চলা জরুরী।
আজকের ব্লগে আমরা মাথা ব্যথার বিভিন্ন ধরণ, কারন এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করবো। মাথাব্যথা সাধারণত কয়েকটি ভিন্ন ধরণে বিভক্ত করা হয়। এর মধ্যে প্রধান কিছু ধরণ হলো:
- টেনশন টাইপ মাথাব্যথা
- মাইগ্রেন টাইপ মাথাব্যথ
- ক্লাস্টার হেডেক
- সাইনাস হেডেক
- হরমোনাল মাথাব্যথা*
- সেকেন্ডারি হেডেক
প্রতিটি ধরণের মাথাব্যথার চিকিৎসা ভিন্ন, তাই সঠিক ধরণ চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

Table of Contents
Toggle১. টেনশন টাইপ মাথাব্যথা
সাধারণত মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, দীর্ঘক্ষণ একভাবে বসে কাজ করা, এবং দেহের দুর্বল পেশির গঠনের কারণে হয়ে থাকে। এটির কারণে মাথার চারপাশে চাপ বা টান অনুভব হয় এবং সাধারণত কপাল, গলা ও কাঁধে ব্যথা করে।
টেনশন টাইপ মাথাব্যথার কারণ
- মানসিক চাপ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ মাথার পেশীকে টান দিতে পারে, যা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
- সারাদিন কম্পিউটার বা ফোনের সামনে থাকা* : একভাবে বসে থাকলে বা একটানা কাজ করলে দেহের অঙ্গবিন্যাস ঠিক থাকে না, যা মাথাব্যথার জন্য দায়ী।
- শারীরিক ক্লান্তি: পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া বা শারীরিকভাবে ক্লান্ত থাকলে মাথাব্যথা হতে পারে।
- আলো ও শব্দের সংবেদনশীলতা : অতিরিক্ত আলো বা উচ্চ শব্দের মধ্যে দীর্ঘ সময় থাকলেও টেনশন টাইপ মাথাব্যথা হতে পারে।
- ঘুমের অভাব : পর্যাপ্ত ঘুম না হলে দেহ ও মনের ক্লান্তি বাড়ে, যা মাথাব্যথার সৃষ্টি করতে পারে।
মাথাব্যথা প্রতিরোধের টিপস
গরম বা ঠান্ডা সেঁক
গরম বা ঠান্ডা সেঁক মাথার পেশীতে শিথিলতা আনতে সাহায্য করে। কাঁধ ও ঘাড়ে গরম সেঁক বা মাথায় ঠান্ডা সেঁক প্রয়োগ করতে পারেন।
চা বা হার্বাল ড্রিঙ্ক
ক্যামোমাইল বা পিপারমিন্ট চা চাপ কমাতে সাহায্য করে। আদা চা বা গ্রিন টি-ও কার্যকর হতে পারে।
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
নিয়মিত গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ও মানসিক চাপ কমে। দিনে কয়েকবার ধীরে শ্বাস নেওয়ার অনুশীলন করতে পারেন।
পানি পান করা
যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান শরীরে ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে, যা মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক।
পর্যাপ্ত ঘুম
প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম ভালো হলে শরীর ও মন প্রশান্ত থাকে এবং টেনশন হেডেক কম হয়।
সতর্কতা
যদি ঘরোয়া উপায়ে উন্নতি না হয় বা মাথাব্যথা তীব্র হয় তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
২. মাইগ্রেন টাইপ মাথা ব্যথার কারণ
মাইগ্রেন ধরনের মাথাব্যথা বলতে সাধারণত তীব্র ব্যথাকে বুঝায়। এটার কারণে মাথার একপাশে বা উভয়পাশে ব্যথা অনুভূত হয়। মাইগ্রেনের ব্যথার সঙ্গে প্রায়ই বমি বমি ভাব, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা, এবং কিছু সময় শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা থাকতে পারে।
মাইগ্রেনের প্রধান কারণসমূহ :
নিউরোকেমিক্যাল পরিবর্তন
মস্তিষ্কে সেরোটোনিন এবং অন্যান্য নিউরোট্রান্সমিটারগুলোর মাত্রার পরিবর্তন মাইগ্রেনের ট্রিগার হতে পারে। সেরোটোনিন রক্তনালীর সংকোচন ও প্রশস্তকরণে ভূমিকা রাখে, যা মাইগ্রেনের ব্যথার কারণ হতে পারে।
হরমোনের পরিবর্তন
বিশেষ করে নারীদের মধ্যে ইস্ট্রোজেনের পরিবর্তনের কারণে মাইগ্রেন শুরু হতে পারে। মাসিক চক্র, গর্ভাবস্থা, বা মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাইগ্রেন হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
পরিবেশগত কারণ
আবহাওয়া পরিবর্তন, তীব্র আলো, উচ্চ শব্দ বা ধোঁয়া থেকেও মাইগ্রেন হতে পারে। অনেকেই গরম বা আর্দ্রতার কারণে মাইগ্রেনে ভুগে থাকেন।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং দীর্ঘস্থায়ী চিন্তা বা উৎকণ্ঠা মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ। এটি শরীরের নিউরোলজিক্যাল কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে এবং মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে।
অনিয়মিত ঘুম
অতিরিক্ত ঘুমানো, কম ঘুমানো বা ঘুমের অনিয়মের কারণে মাইগ্রেন হতে পারে। ঘুমের রুটিন ঠিক না থাকলে শরীরে নিউরোকেমিক্যাল ভারসাম্য নষ্ট হয়, যা মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে।
তীব্র গন্ধ
কিছু তীব্র গন্ধ, যেমন- পারফিউম, পেইন্ট, তেল, বা ধোঁয়া থেকে মাইগ্রেন ট্রিগার হতে পারে। এটি স্নায়ু ব্যবস্থাকে উদ্দীপিত করে ফলে মাথাব্যথা শুরু হয়।
মাইগ্রেন প্রতিরোধের টিপস
মাইগ্রেনের ট্রিগারগুলো এড়ানো, নিয়মিত ঘুমানো, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যমে মাইগ্রেন প্রতিরোধ করা যেতে পারে। তবে যদি নিয়মিত মাইগ্রেন হয় বা তীব্র হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ বা থেরাপি গ্রহণ করা উচিত।
পর্যাপ্ত পানি পান করা
- ডিহাইড্রেশন মাইগ্রেনের একটি অন্যতম কারণ। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর হাইড্রেট থাকে এবং মাইগ্রেনের ঝুঁকি কমে।
- প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। বিশেষ করে গরমে বা শারীরিক পরিশ্রমের সময় বেশি পানি পান করা দরকার।
নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুম
- ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত ঘুমানো উভয়ই মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা নিয়মিত ঘুমানো মাইগ্রেনের প্রতিরোধে সহায়ক।
- নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও নির্দিষ্ট সময়ে উঠার অভ্যাস করতে হবে।
নিয়মিত যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন
- যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশন মানসিক চাপ কমায় এবং মাইগ্রেন প্রতিরোধে সহায়ক। নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় ও মনকে শিথিল করে।
- বিশেষ করে ব্রিদিং এক্সারসাইজ, শবাসন এবং ধ্যান চাপ কমিয়ে মাইগ্রেনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
হট এবং কোল্ড কম্প্রেস
- মাইগ্রেনের সময় মাথায় ঠান্ডা সেঁক বা গলায় গরম সেঁক দিলে ব্যথা কিছুটা কমতে পারে। কোল্ড কম্প্রেস রক্তনালীর সংকোচন ঘটিয়ে ব্যথা কমায়। আবার হট কম্প্রেস পেশী শিথিল করতে সাহায্য করে।
- মাথার একপাশে বা ঘাড়ে হট বা কোল্ড প্যাক প্রয়োগ করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
আদা ও লেবু চা
আদায় আছে প্রদাহনাশক গুণাগুণ যা মাথাব্যথা প্রশমনে সহায়ক। আদা চা বানিয়ে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা কমতে পারে। এটি বমি ভাবও কমাতে সাহায্য করে, যা মাইগ্রেনের একটি সাধারণ উপসর্গ।
এই ঘরোয়া উপায়গুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে মাইগ্রেন প্রতিরোধ করা সহজ হয়ে উঠবে। তবে যদি মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়মিত ও তীব্র হয়। তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
ক্লাস্টার হেডেক
ক্লাস্টার হেডেক হলো একটি তীব্র ধরনের মাথাব্যথা যা সাধারণত মাথার একপাশে এবং বিশেষ করে চোখের চারপাশে অনুভূত হয়। এর ব্যথা অত্যন্ত তীব্র এবং প্রতি অ্যাটাক ১৫ মিনিট থেকে ৩ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
ক্লাস্টার হেডেকের কারণ :
ক্লাস্টার হেডেকের সঠিক কারণ এখনও সম্পূর্ণ জানা যায়নি। তবে কিছু বিষয় এতে ভূমিকা রাখতে পারে:
হাইপোথ্যালামাসে কার্যক্রমের পরিবর্তন
মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশের কার্যক্রমের পরিবর্তনের কারণে ক্লাস্টার হেডেক হতে পারে। এটি দেহের বায়োলজিক্যাল ক্লক নিয়ন্ত্রণ করে এবং কিছু নির্দিষ্ট সময়ে মাথাব্যথা সৃষ্টি করে।
জেনেটিক প্রভাব
পারিবারিক ইতিহাস ক্লাস্টার হেডেকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যদি পরিবারের কারও এই সমস্যা থাকে, তবে উত্তরাধিকার সূত্রে ক্লাস্টার হেডেক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
আবহাওয়ার পরিবর্তন
আবহাওয়া বা মৌসুমের পরিবর্তন, বিশেষ করে গ্রীষ্ম বা শরৎকালে ক্লাস্টার হেডেক বেশি দেখা যায়। এ কারণেই একে মৌসুমভিত্তিক মাথাব্যথা বলা হয়।
অ্যালকোহল ও ধূমপান
ক্লাস্টার হেডেকের সময় অ্যালকোহল সেবন ব্যথাকে তীব্র করতে পারে। অনেক সময় ধূমপান বা নিকোটিনযুক্ত পদার্থ ক্লাস্টার হেডেক ট্রিগার করতে পারে।
উচ্চ তীব্রতার আলো ও গন্ধ
উজ্জ্বল আলো বা তীব্র গন্ধ ও ক্লাস্টার হেডেকে ভূমিকা রাখে। যেমন- পারফিউম, পেইন্ট, বা পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্লাস্টার হেডেকের জন্য দায়ী।
ক্লাস্টার হেডেক প্রতিরোধের টিপস
ক্লাস্টার হেডেক পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব নয়। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করে এর প্রকোপ এবং তীব্রতা কমানো যেতে পারে। এখানে কিছু কার্যকর উপায় দেওয়া হলো:
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া (ডিপ ব্রিদিং) ক্লাস্টার হেডেকের সময় ব্যথা প্রশমনে সহায়ক। এটি শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়ায় এবং চাপ কমায়।
নিয়মিত ঘুম ও রুটিন বজায় রাখা
প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং নির্দিষ্ট সময়ে জাগ্রত হওয়া শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লক ঠিক রাখতে সাহায্য করে, যা ক্লাস্টার হেডেক প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
অ্যালকোহল ও ধূমপান এড়ানো
ক্লাস্টার হেডেকের সময় অ্যালকোহল ও নিকোটিন এড়ানো উচিত। এগুলো ক্লাস্টার হেডেকের তীব্রতা বাড়াতে পারে।
গাঢ় রঙের চশমা পরা
উজ্জ্বল আলো ক্লাস্টার হেডেক ট্রিগার করতে পারে। তাই সূর্যের আলো বা উজ্জ্বল আলোতে বাইরে গেলে গাঢ় রঙের চশমা পরা উচিত।
শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখা
পর্যাপ্ত পানি পান করে শরীরের হাইড্রেশন ঠিক রাখলে ক্লাস্টার হেডেকের প্রকোপ কমানো সম্ভব হতে পারে।
সতর্কতা
যদি ঘরোয়া উপায়ে ক্লাস্টার হেডেকের উপশম না হয় বা ব্যথা নিয়মিত এবং তীব্র হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সাইনাস হেডেক
সাইনাস হেডেক হলো এমন এক ধরনের মাথাব্যথা, যা সাধারণত সাইনাসের সংক্রমণ বা প্রদাহের কারণে হয়। সাইনাস হলো মুখমণ্ডলের হাড়ের মধ্যে বায়ুপূর্ণ ক্যাভিটি, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সাইনাস হেডেকের কারণ :
সাইনাসের সংক্রমণ (সাইনোসাইটিস)
ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের কারণে সাইনাসের সংক্রমণ হলে সাইনাস প্রদাহ হতে পারে। এই প্রদাহ সাইনাস হেডেকের প্রধান কারণ।
অ্যালার্জি
ধূলা, ফুলের রেণু, পশুর লোম, বা অন্যান্য অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসার কারণে সাইনাস প্রদাহিত হতে পারে, যা সাইনাস হেডেকের কারণ হতে পারে।
ঠান্ডা লাগা বা ফ্লু
সাধারণ ঠান্ডা বা ফ্লুর কারণে সাইনাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে তরল জমে প্রদাহ সৃষ্টি হয় এবং ব্যথা অনুভূত হয়।
পরিবেশগত কারণ
ধূলাবালি, ধোঁয়া, এবং দূষিত পরিবেশে বেশি সময় কাটালে সাইনাসে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। যা সাইনাস হেডেক ট্রিগার করে।
নাকের অভ্যন্তরীণ সমস্যা
নাকের ভিতরের কিছু গঠনগত সমস্যা। যেমন- ডেভিয়েটেড সেপটাম বা পলিপাস থাকলে সাইনাসে তরল জমে যেতে পারে এবং সাইনাস হেডেক হতে পারে।
সাইনাস হেডেক প্রতিরোধের টিপস :
সাইনাস হেডেক প্রতিরোধের জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় কার্যকর হতে পারে। এগুলো সাইনাসের প্রদাহ ও সংক্রমণ কমাতে সহায়ক এবং ব্যথা প্রশমনে কার্যকর।
বাষ্প নেওয়া (স্টিম থেরাপি)
- গরম পানির বাষ্প নিলে সাইনাসের ভেতরের জমে থাকা মিউকাস বা কফ নরম হয়। ফলে সহজে বের হয়ে আসে। এটি সাইনাসের চাপ কমিয়ে সাইনাস হেডেক প্রশমিত করতে সহায়ক।
- প্রতিদিন ২-৩ বার গরম পানির বাষ্প নিলে সাইনাস পরিষ্কার হয় এবং ব্যথা কমে।
আদা ও মধু চা
- আদায় প্রাকৃতিক প্রদাহনাশক গুণাগুণ আছে, যা সাইনাসের প্রদাহ কমায়। মধুর সঙ্গে আদা চা খেলে সাইনাস হেডেক কমাতে সাহায্য করে।
- দিনে ২-৩ বার আদা ও মধু মিশিয়ে চা পান করা উপকারী।
হাইড্রেশন বজায় রাখা
- পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর হাইড্রেট থাকে। সাইনাসে জমে থাকা মিউকাস পাতলা হয়ে যায়, ফলে সহজে বের হয়ে আসে।
- দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরি।
অ্যাপল সিডার ভিনেগার
- অ্যাপল সিডার ভিনেগার সাইনাসের মিউকাস পাতলা করে এবং সাইনাস পরিষ্কার করতে সহায়ক।
- এক গ্লাস গরম পানির মধ্যে ১-২ চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে দিনে দুইবার পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
ধূলাবালি ও ধোঁয়া এড়ানো
সাইনাসের সংক্রমণ এড়াতে ধূলাবালি ও ধোঁয়াযুক্ত পরিবেশে না যাওয়া ভালো। বাইরে গেলে মাস্ক পরা আবশ্যক।
সতর্কতা
ঘরোয়া উপায়ে সাইনাস হেডেক নিয়ন্ত্রণে না থাকলে, ব্যথা তীব্র হলে বা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
হরমোনাল মাথাব্যথা
হরমোনাল মাথাব্যথা হলো এমন এক ধরনের মাথাব্যথা যা সাধারণত নারীদের হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকে।
হরমোনাল মাথাব্যথার কারণ :
ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের ওঠানামা
- ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা ওঠানামার কারণে মস্তিষ্কের রক্তনালীর সংবেদনশীলতা বাড়তে পারে। যা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় ।
- মাসিক চক্রের সময় বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন হ্রাস পাওয়ায় মাইগ্রেনের মতো মাথাব্যথা হতে পারে।
মাসিক চক্র
- মাসিক চক্রের সময় ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে গেলে মাইগ্রেনের মতো তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে, যাকে মেনস্ট্রুয়াল মাইগ্রেন ও বলা হয়।
গর্ভাবস্থা ও মেনোপজ
গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন মাথাব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। মেনোপজের সময় ও হরমোনের ওঠানামা মাথাব্যথা ট্রিগার করতে পারে।
জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল
কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের কারণে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন মাত্রায় ওঠানামা ঘটে, যা মাথাব্যথা বা মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে।
হরমোনের অতিরিক্ত ব্যবহার
হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি বা ওষুধের মাধ্যমে হরমোন সেবনের কারণে অনেক সময় মাথাব্যথা হতে পারে।
হরমোনাল মাথাব্যথা প্রতিরোধের টিপস
হরমোনাল মাথাব্যথা কমাতে কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে। এগুলো হরমোনের ওঠানামার প্রভাব কমাতে এবং মাথাব্যথা প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। যেমন:
ভিটামিন ও মিনারেলস গ্রহণ
- ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেসিয়াম এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হরমোনাল মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন- বাদাম, সবুজ শাকসবজি, কলা। ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ, ডিম, দুধ খাদ্যতালিকায় রাখুন।
তুলসী ও আদার চা
- তুলসী এবং আদার প্রদাহনাশক গুণাগুণ হরমোনাল মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক। তুলসী বা আদা চা দিনে ২-৩ বার পান করলে মাথাব্যথা কমে।
- অ্যাপল সিডার ভিনেগার*: ১ গ্লাস পানির সাথে ১ চা চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করলে হরমোনাল ভারসাম্য বজায় থাকে। এটি মাথাব্যথার প্রকোপ কমাতেও সহায়ক।
প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ খাদ্য
প্রাকৃতিকভাবে ইস্ট্রোজেন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- সয়াবিন, বাদাম, বীজ, ব্রকলি, এবং ফুলকপি হরমোনাল ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং হরমোনাল মাথাব্যথা প্রতিরোধে সহায়ক। মটরশুঁটি, ডাল, বাদাম, ডিম ইত্যাদিতে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে।
এই ঘরোয়া উপায়গুলো অনুসরণ করে হরমোনাল মাথাব্যথা প্রতিরোধ করা যেতে পারে। তবে যদি হরমোনাল মাথাব্যথা নিয়মিত এবং তীব্র হয়। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আজকের এই ব্লগটি যদি আপনার কাছে ভালো লাগে বা আপনি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই বলবো FIT FOR LIFE কে ফলো করুন এবং আপনার আপনজনের কাছে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।
Subscribe Our Newsletter
Related Products


Digestive Health Combo – ডাইজেস্টিভ হেলথ কম্বো



Mabroom VIP Royal Dates – মাবরুম ভিআইপি রয়াল খেজুর ৩ কেজি

Diabetic Tea-ডায়াবেটিক চা


Sohoj Ranna Combo Pack – সহজ রান্না কম্বো প্যাক
Related Posts
Latest Product
-
Pure Delight Combo Pack - পিওর ডিলাইট কম্বো প্যাক
2,850.00৳Original price was: 2,850.00৳.2,420.00৳Current price is: 2,420.00৳. -
Digestive Health Combo - ডাইজেস্টিভ হেলথ কম্বো
1,950.00৳Original price was: 1,950.00৳.1,649.00৳Current price is: 1,649.00৳. -
Eid Anando Combo Pack - ঈদ আনন্দ কম্বো প্যাক
3,320.00৳Original price was: 3,320.00৳.2,820.00৳Current price is: 2,820.00৳. -
Sohoj Ranna Combo Pack - সহজ রান্না কম্বো প্যাক
2,940.00৳Original price was: 2,940.00৳.2,499.00৳Current price is: 2,499.00৳. -
Brown Sugar - আখের লাল চিনি 180.00৳ – 850.00৳


Talbina-তালবিনা রাসুল (সঃ) এর সুন্নতি খাবার




Talbina-তালবিনা (Half Combo )



