Honey, মধু, স্বাস্থ টিপস

মধু কেন হাজার বছরেও নষ্ট হয় না?

মধু কেন হাজার বছরেও নষ্ট হয় না?

আপনি কি কখনো ভেবেছেন, মধু কেন হাজার বছরেও নষ্ট হয় না? প্রাচীন মিশরীয়দের সময় থেকেই মধু মানুষের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান ছিল। মমিদের কবর থেকেও মধু আবিষ্কৃত হয়েছে যা হাজার হাজার বছর ধরে নষ্ট হয়নি। আজ আমরা এই অমৃতের মতো খাবারের পেছনের বিজ্ঞান সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

মধু কেন হাজার বছরেও নষ্ট হয় না?
মধু কেন হাজার বছরেও নষ্ট হয় না?

মধু নষ্ট না হওয়ার রহস্য:

মধু নষ্ট না হওয়ার পেছনে বিজ্ঞানসম্মত কারণ রয়েছে। মধুর মধ্যে রয়েছে কিছু বিশেষ উপাদান যা একে নষ্ট হতে রক্ষা করে:

  • উচ্চ শর্করা ও কম পানি: মধুতে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি এবং পানির পরিমাণ খুবই কম।প্রাকৃতিক, অপ্রক্রিয়াজাত মধুতে মাত্র ১৪% হতে ১৮% আর্দ্রর্তা থাকে। আর্দ্রর্তার মাত্রা ১৮% এর নিচে যতক্ষণ থাকে, ততক্ষণ মধুতে কোন জীবাণু বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। এই কারণে ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য সূক্ষ্মজীব বংশবিস্তার করতে পারে না। শর্করার উচ্চ ঘনত্ব একটি অতিশয় শুষ্ক পরিবেশ তৈরি করে যা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির জন্য অনুপযুক্ত।
  • অম্লীয়তা : মধু প্রাকৃতিকভাবেই অ্যাসিডিক। এই অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে। মধুর pH সাধারণত 3.2 থেকে 4.5 এর মধ্যে থাকে, যা অনেক ব্যাকটেরিয়ার জন্য অতিরিক্ত অম্লীয়।
  • হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড: মৌমাছি মধু তৈরির সময় একটি এনজাইম নিঃসরণ করে যা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড তৈরি করে। এই হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড একটি শক্তিশালী জীবাণুনাশক। এটি মধুকে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য ক্ষতিকর জীবাণু থেকে রক্ষা করে।
  • অন্যান্য অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান: মধুতে আরো অনেক ধরনের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যা একে নষ্ট হতে বাধা দেয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিনোলিক যৌগ, ফ্লেভোনয়েড এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানগুলো মধুকে একটি প্রাকৃতিক সংরক্ষক করে তোলে।

মধুর ইতিহাস ও উপকারিতা:

  • প্রাচীন মিশর: প্রাচীন মিশরে মধুকে দেবতাদের অর্পণ করা হতো এবং এটি ফারাওদের / ফিরাউন জন্য একটি মূল্যবান খাদ্য ছিল। মিশরীয়রা মধুকে চিকিৎসা ও সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করত।
  • আয়ুর্বেদ: আয়ুর্বেদে মধুকে একটি অমৃত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি হাজার হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
  • স্বাস্থ্য উপকারিতা: মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজম শক্তি বাড়াতে এবং শক্তি সরবরাহ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি চামড়ার যত্নে ব্যবহৃত হয়। মধুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান অনেক ধরনের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

মধু কেনার সময় কিছু বিষয়:

  • খাঁটি মধু: সবসময় খাঁটি মধু দেখে কিনুন। বাজারে অনেক ধরনের নকল মধু পাওয়া যায়। খাঁটি মধু চেনার উপায় জানুন
  • প্যাকেজিং: মধু কেনার সময় প্যাকেজিং দেখে নিন। প্যাকেজিং পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ হওয়া উচিত। মধু সংরক্ষনের জন্য কাচের পাত্র উত্তম।
  • ব্র্যান্ড: ভালো এবং বিশ্বস্ত কোম্পানি / ব্র্যান্ডের মধু কিনুন। 

মধু একটি অত্যন্ত মূল্যবান খাবার।তাই আজই থেকে আপনার খাদ্যতালিকায় মধু যোগ করুন। মধু শুধু মিষ্টি স্বাদের খাবার নয়, এটি একটি প্রাকৃতিক ওষুধও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *