প্রতিদিনের খাবার আমাদের শক্তি ও পুষ্টির প্রধান উৎস। তবে, যদি খাবার ঠিকমতো হজম না হয়, তাহলে সেই পুষ্টি পাওয়া সম্ভব নয়। হজম শক্তি হলো শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা আমাদের খাদ্যকে পুষ্টিতে রূপান্তরিত করে এবং প্রয়োজনীয় এনার্জি সরবরাহ করে। কিন্তু যখন হজম শক্তি কমে যায়, তখন শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, কাজ করার ক্ষমতা কমে যায় এবং আপনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। আজকের ব্লগে হজম শক্তি কমে গেলে যেসব সমস্যা হয় তা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো।
Table of Contents
Toggleহজম শক্তি কমে গেলে যেসব সমস্যা হয়
হজম শক্তি কি ?
হজম শক্তি বলতে মানুষের দেহে খাবারকে ভেঙে পুষ্টি শোষণ করার ক্ষমতাকে বোঝায়। আমাদের পরিপাকতন্ত্রের (digestive system) মাধ্যমে খাবার ভেঙে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে এবং বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়।
হজম শক্তি মূলত কয়েকটি ধাপে কাজ করে:
- খাবার গ্রহণ: মুখে চিবিয়ে এবং লালার সাহায্যে খাবার ভেঙে গলা দিয়ে পাকস্থলীতে পাঠানো হয়।
- পাচক রস নিঃসরণ: পাকস্থলী এবং ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে অ্যাসিড ও এনজাইম নিঃসরণ হয়, যা খাবারকে ভেঙে সহজপাচ্য করে।
- পুষ্টি শোষণ: ক্ষুদ্রান্ত্রের দেয়াল দিয়ে ভেঙে যাওয়া খাবারের পুষ্টি উপাদান রক্তে শোষিত হয়।
- বর্জ্য নির্গমন: খাদ্যের অপ্রয়োজনীয় অংশ বৃহদান্ত্র দিয়ে বেরিয়ে যায় বা মিলি. ত্যাগ করা।
হজম শক্তি ভালো হলে দেহ সুস্থ থাকে এবং পুষ্টি ঠিকমতো কাজ করে।
হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ
হজম শক্তি কমে যাওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো:
- অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস: অত্যধিক ফাস্টফুড, তৈলাক্ত বা মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া।
- অপর্যাপ্ত পানি পান: পানি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করতে সাহায্য করে। তাই যারা পর্যাপ্ত পানি পান করেন তারা হজম জনিত সমস্যায় ভুগে থাকে।
- অনিয়মিত জীবনযাপন: সঠিক সময়ে না খাওয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব।
- স্ট্রেস ও দুশ্চিন্তা: মানসিক চাপ ও দুঃশ্চিন্তা হজমশক্তিকে প্রভাবিত করে।
- রান্নায় ব্যবহার করা তেলঃ শুনতে অবাক লাগলেও আমরা রান্নায় যে সকল তেল ব্যবহার করি , এই তেল এর জন্য অধিকাংশ পরিবারে হজমের সমস্যা দেখা দেয়, এর মধ্যে সয়াবিন তেল ব্যবহার প্রথম সারিতে রয়েছে।
হজম শক্তি কমে গেলে যেসব সমস্যা হয়
হজম শক্তি কমে গেলে শরীর সঠিকভাবে খাবারের পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না, যার ফলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। নিচে এর প্রধান লক্ষণ ও সমস্যা তুলে ধরা হলো:
- পেট ফাঁপা ও অস্বস্তি:
পেট ফাঁপা ও অস্বস্তি হজম শক্তি দুর্বল হওয়ার অন্যতম প্রধান লক্ষণ। এটি সাধারণত তখনই ঘটে, যখন দেহ খাবারকে সঠিকভাবে ভাঙতে এবং শোষণ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে পাকস্থলী ও অন্ত্রে গ্যাস জমে এবং পেট ভারী ও ফেঁপে যায়, যা খুবই বিরক্তকর অনুভূতি ।
- অম্লতা ও বুক জ্বালাপোড়া করা:
হজম প্রক্রিয়া ধীরগতি হয়ে গেলে বা সঠিকভাবে কাজ না করলে পাকস্থলীতে খাবার দীর্ঘ সময় ধরে থেকে যায়। এই পরিস্থিতিতে পাকস্থলী আরও বেশি হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) উৎপন্ন করে, যা খাবার ভাঙার জন্য প্রয়োজন। কিন্তু এই অতিরিক্ত অ্যাসিড অন্ননালীতে উঠে বুক জ্বালাপোড়া বা অম্লতার সৃষ্টি করে। এর ফলে গলা বা বুকের মাঝখানে জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হওয়া:
কোষ্ঠকাঠিন্য তখন হয়, যখন পরিপাকতন্ত্রে খাদ্য ধীরগতিতে অগ্রসর হয়। হজম শক্তি কম থাকলে অন্ত্রের পানির শোষণ বেশি হয়, ফলে মল শক্ত ও শুকনো হয়ে যায়। এ সমস্যা সাধারণত অপর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার, পানি কম পান করা, এবং শারীরিক সক্রিয়তার অভাবে বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে, ডায়রিয়া ঘটে যখন অপরিপাকিত খাবার অন্ত্র দিয়ে খুব দ্রুত বের হয়ে যায়। এতে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও পানি শোষণ করতে পারে না, ফলে মল পাতলা ও অতিরিক্ত তরল হয়। হজম শক্তি কম থাকলে এই দুটি বিপরীতধর্মী সমস্যাই দেখা দিতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পেট ব্যথা, পেট ফেঁপে থাকা, এবং অস্বস্তি দেখা দেয়, আর ডায়রিয়ার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়।
- শারীরিক দুর্বলতা :
যখন দেহ খাবারকে সঠিকভাবে হজম করতে পারে না, তখন প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যেমন প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন, এবং খনিজ শরীর শোষণ করতে ব্যর্থ হয়। পুষ্টি উপাদানের অভাবে শরীর পর্যাপ্ত এনার্জি উৎপন্ন করতে পারে না, যার ফলে শারীরিক দুর্বলতা এবং ক্লান্তি অনুভূত হয়।
- ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা:
ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা হজম শক্তি দুর্বল হওয়ার একটি সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। যখন দেহের হজম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বা টক্সিন বের হতে দেরি হয়। এই টক্সিন জমে থেকে রক্তপ্রবাহে ছড়িয়ে পড়ে এবং ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে। এর মধ্যে ব্রণ, ত্বকের রুক্ষতা, শুষ্কতা, লালচে ভাব, কিংবা এলার্জির মতো সমস্যা প্রধান।
- ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস:
ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস হজম শক্তির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত একটি বিষয়। যখন শরীরের হজম শক্তি দুর্বল হয়, তখন খাবারের পুষ্টি উপাদান সঠিকভাবে শোষণ হতে পারে না, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাসের সমস্যা দেখা দেয়।
- ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়া:
ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়া হজম শক্তির দুর্বলতার গুরুত্বপূর্ণ পরিণতি। শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রধানত পেটের স্বাস্থ্য ও হজম প্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল। পেটে অনেক ধরণের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে যা শরীরকে রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। যখন হজম শক্তি দুর্বল হয়, তখন এই ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
হজম শক্তি বাড়ানোর উপায়
হজম শক্তি অনেকভাবেই বাড়ানো যায়, যা খাবারের সঠিক হজম এবং শরীরের সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। এখানে কিছু কার্যকরী উপায় দেওয়া হলো যা আপনাকে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে।
১. আঁশযুক্ত খাবার খান
আঁশযুক্ত খাবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে এবং পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। শাকসবজি, ফলমূল, গোটা শস্য (যেমন ব্রাউন রাইস, ওটস), শিম জাতীয় খাবার এবং যবের ছাতু হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।এজন্য আপনার খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখুন। অঁশ অন্ত্রের কার্যকারিতা ভালো রাখে এবং খাবার দ্রুত হজম হতে সাহায্য করে। আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে অন্যতম ও বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত যে হজমের সমস্যা দূর করতে যবের ছাতু সব চেয়ে ভালো কাজ করে। যবের ছাতু যা তালবিনার প্রধান উপাদান। আর এই তালবিনা আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) ১৪০০ বছর আগে আমদের কে খাবার নির্দেশ দিয়েছেন।
-
Sale Product on saleBarley Powder-ঢেঁকি ছাঁটা যবের ছাতু350.00৳ – 700.00৳
-
Sale Product on saleTalbina-তালবিনা রাসুল (সঃ) এর সুন্নতি খাবার
1,600.00৳Original price was: 1,600.00৳.1,400.00৳Current price is: 1,400.00৳.
২. প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার খান
প্রোবায়োটিক যুক্ত খাদ্য যেমন দই, কেফির, মিসো, এবং গাঁজানো রসুন মধু পেটের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়। এরা অন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং হজম প্রক্রিয়া ভালো করতে সাহায্য করে। প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবারের ন্যাচারাল ও সেরা উৎস গাঁজানো রসুন মধু। এই গাঁজানো রসুন মধু এমন একটি খাবার যা মধুর মধ্যে রসুন প্রায় ৩ মাস রেখে গাঁজন প্রক্রিয়ায় তৈরি করতে হয়। যা আপনি ঘরে থাকা মধু ও রসুন দিয়ে তৈরি করতে পারবেন। গাঁজন প্রক্রিয়ার ফলে এটি সহজে খাওয়ার মতো হয় এবং এর উপকারিতা ২০ গুণ বেড়ে যায়।
-
Sale Product on saleFermented Garlic Honey-গাঁজানো রসুন মধু1,000.00৳ – 2,800.00৳
যাদের সময়ের অভাব বা গাঁজানোর ঝামেলায় যেতে চান না, তারা সহজেই Fit for Life-এর গাঁজানো রসুন মধু ব্যবহার করতে পারেন। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এবং সরাসরি খেতে পারবেন। নিয়মিত খেলে আপনার হজম সমস্যা দূর হবে, আপনার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং যৌন সমস্যা দূর হবে এবং যৌনশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শরীরের হাইড্রেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করার মাধ্যমে পেটের কার্যক্রম ঠিক রাখা যায় এবং খাবার সহজে হজম হয়। কম পানি পান করলে হজম প্রক্রিয়া ধীর হতে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই প্রতিদিন ৭-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
৪. হালকা ব্যায়াম করুন
প্রতিদিন কিছুটা শারীরিক কার্যকলাপ, যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম বা সাইক্লিং, হজম প্রক্রিয়া বাড়াতে সহায়তা করে। ব্যায়াম অন্ত্রের মুভমেন্ট বাড়ায়, ফলে খাবার সহজে হজম হয় এবং গ্যাস বা ফ্ল্যাটুলেন্সের সমস্যা কমে যায়।
৫. অল্প করে বারবার খাবার খান
একবারে অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে, অল্প পরিমাণে নিয়মিত খাবার খাওয়া উচিত। ছোট ছোট খাবারের অংশ হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং পরিপাকতন্ত্রে চাপ কমায়।
৬. খাদ্য পরিহার করুন
হজম শক্তি বাড়াতে কিছু খাদ্য পরিহার করা উচিত। যেমন অতিরিক্ত তেল, মশলা, চিনি, বা প্রক্রিয়াজাত খাবার। এগুলো হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে এবং পাকস্থলীতে গ্যাস বা অ্যাসিডিটি সৃষ্টি করতে পারে।
৭. প্রতিদিন নিয়মিত খাদ্য অভ্যাস বজায় রাখুন
খাবারের সময় ঠিকভাবে মেনে চলা এবং নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। খাবার খাওয়ার সময় দ্রুত খাওয়া বা অতিরিক্ত খাবার পরিহার করুন।
৮. মানসিক চাপ কমান
মানসিক চাপ হজম প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে এবং অন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করে। ধ্যান, শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম, বা কিছু সময়ের জন্য বিশ্রাম নেওয়া মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
১০. অ্যলকোহল ও ধূমপান পরিহার করুন
অ্যলকোহল ও ধূমপান হজম প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো পরিহার করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
১১. সরিষার তেল ব্যবহার করুন
হজম শক্তি বাড়াতে সরিষার তেল ব্যবহার খুবই কার্যকরী। সরিষার তেল একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং এন্টিসেপ্টিক উপাদান, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি শরীরের পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে । সরিষার তেলে থাকা অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি পাকস্থলীতে খাবার দ্রুত হজম হতে সাহায্য করে।
-
Sale Product on saleMustard Oil-কাঠের ঘানি ভাঙ্গা সরিষার তেল320.00৳ – 1,500.00৳
উপসংহার:
হজম শক্তি আমাদের শরীরের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যদি হজম শক্তি কমে যায়, তাহলে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ করতে সক্ষম হয় না, যার ফলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। পেট ফাঁপা, অম্লতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, শারীরিক দুর্বলতা, ত্বকের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস, এবং ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়ার মতো সমস্যা হজম শক্তি কমে যাওয়ার ফলস্বরূপ হতে পারে। তবে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ কমানো এবং কিছু খাবার ও পদ্ধতির মাধ্যমে হজম শক্তি পুনরুদ্ধার এবং উন্নত করা সম্ভব। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শক্তি ও পুষ্টির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে, যা সুস্থ ও প্রাণবন্ত জীবনযাপনে সাহায্য করে।