JK Lifestyle কি এবং কাদের জন্য

প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ অমরত্ব আবিষ্কারের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতো। কিন্তু একবার জন্ম নিলে তাকে মরতেই হবে, এর চাইতে চিরন্তন সত্য পৃথিবীর বুকে দ্বিতীয়টি নেই। তাই পৃথিবীর বুকে ছোট্ট   এই জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন আরো বেশি সুখী ও সমৃদ্ধিময় হয় সেই আকাঙ্ক্ষায় মানুষ কত কিছুই না করে / তার জন্য  মানুষের কত শত আয়োজন।  অথচ “স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল” কথাটি আপাতদৃষ্টিতে আমরা দেখে থাকলেও কখনো সুস্বাস্থ্যের প্রতি তেমন নজর দেওয়া হয় না আমাদের অথবা আমরা জানিই না কিভাবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া যায়!   

এই চিরাচরিত সমস্যার সমাধান খুঁজে পেতে,যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন গভেষাণা ও তত্ব আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন এরই ধারাবাহিকতায় একজন লাইফস্টাইল মডিফায়ার এবং হেলথ রেভ্যুলেশন (Health Revolution) এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ডা. জাহাঙ্গীর কবির (Dr. Jahangir Kabir) একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনধারার প্রবর্তন করেছেন যার নাম জে কে লাইফস্টাইল (JK Lifestyle). 

 JK Lifestyle (জে.কে লাইফ স্টাইল) আসলে কি?

ডা. জাহাঙ্গীর কবির (Dr. Jahangir Kabir) এর নামের আদ্যক্ষর নিয়ে মূলত JK Lifestyle নামকরণ করা হয়েছে। JK Lifestyle একটি সমন্বিত জীবনধারা যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির শারীরিক  স্বাস্থ্য, সুস্থতা, মানসিক  প্রশান্তি এবং পারিবারিক সম্পর্কের উন্নতির উপর গুরুত্ব দেয়। এই লাইফস্টাইলের  মূল উদ্দেশ্য হল, একজন ব্যক্তির শারীরিক সুস্থতার বিভিন্ন দিককে একত্রিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপনের জন্য সঠিক পথনির্দেশনা দেয়া। সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন একটি নিয়মতান্ত্রিক খাদ্যাভ্যাস। আর এই লাইফস্টাইলের অন্যতম প্রধান গুরুত্বের জায়গা হলো মানুষের জন্য একটি আদর্শ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা, যা একজন মানুষকে শারীরিক ভাবে সুস্থ্য রেখে সুখী ও সমৃদ্ধ জীবন গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।   

JK Lifestyle কি এবং কাদের জন্য

JK Lifestyle কি এবং কাদের জন্য

 JK Lifestyle  কাদের জন্য?

ডা. জাহাঙ্গীর কবির (Dr. Jahangir Kabir) এর নির্দেশিত JK Lifestyle গাইডলাইন টি পুরোটা পড়লে এই ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এটি যেকেউ ই অনুসরণ করতে পারে। তবে অনুসরণ করলে পূর্নাঙ্গভাবে অনুসরন করতে হবে। তবে চাহিদার ভিত্তিতে শ্রেণিবিভাগ করলে নিম্নে বর্ণিত এই মানুষগুলো অবশ্যই এই লাইফস্টাইল অনুসরণ করতে পারেন।

 ১) স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ: যারা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে আগ্রহী এবং নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন।

 ২) ফিটনেস প্রেমীরা: যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন বা নতুন করে ব্যায়াম শুরু করতে চান।

 ৩) যারা ওজন কমাতে কিংবা বাড়াতে চান: অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য সঠিক পুষ্টি এবং ব্যায়ামের পরিকল্পনা খুঁজছেন পাশাপাশি যারা মাসেল বিল্ডআপ এবং পর্যাপ্ত ওজন বাড়াতে চান।

 ৪)মনসিক স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি: যারা স্ট্রেস, উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ ম্যানেজ করতে চান।

 ৫) সাধারণ জনগণ: যে কোনও বয়সের মানুষ, যারা তাদের জীবনযাত্রা উন্নত করতে চান।

৬) মেডিসিন ফ্রি লাইফঃ  যারা মেডিসিন ফ্রি লাইফ ও হসপিটাল এবং ডাক্তারের হয়রানি থেকে নিজেকে বাঁচাতে চান। 

এই গাইডলাইনটি সকলের জন্য কার্যকরী, তবে বিশেষ করে যুবক এবং মধ্যবয়সী মানুষের জন্য তা অধিক প্রাসঙ্গিক। 

 যে বিশেষ শর্ত মেনে JK Lifestyle বাস্তবায়িতঃ

এই বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে মানুষের জীবনযাপন অসংখ্য দিক থেকে ভিন্ন। তবে, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা সব মানুষের মৌলিক আকাঙ্ক্ষা। সুস্থতার জন্য কিছু মূল নীতিমালা রয়েছে, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম অভিন্ন ই রয়ে গেছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হচ্ছে, কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়গুলোর গুরুত্ব কখনোই কমেনি। আর এখানেই JK Lifestyle বিশ্বাস করে, একবিংশ শতাব্দীতে প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে আমাদের জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবর্তন ঘটানো প্রয়োজন। সুস্থতার চাবিকাঠি পাঁচটি বিশেষ শর্তের মধ্যে নিহিত, যা সম্মিলিতভাবে পালন করা হয় JK Lifestyle-এর মাধ্যমে। এই বিশেষ শর্তগুলো হলোঃ

১) স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

২) না খাওয়ার অভ্যাস (অটোফেজি)

৩) ঘুমের অভ্যাস

৪) দৈনন্দিন ব্যায়ামের অভ্যাস

৫) মানসিক প্রশান্তির চর্চা

এবার আসি এই ব্যাপারগুলো কিভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব এবং কিভাবে কাজ করে।

 ১) স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: সুস্থ থাকতে চাইলে সবার আগে আমাদের নজর দিতে হবে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের দিকে। JK Lifestyle স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গঠনে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা দিয়েছে। যেখানে অন্তর্ভুক্ত আছে প্রাত্যহিক জীবনে আমরা কি কি খেতে পারবো , কি কি খেতে পারবো না এবং খাবারের মাত্রা ও নির্দেশিকা।

খাবার তালিকার মধ্যে রয়েছে সব বিশেষায়িত তেল, প্রোটিন, শর্করা, পানীয়।

 তেল (Fat) যেমন:

*Organic Extra Virgin Olive Oil

*Organic Extra Virgin Cold Pressed Coconut Oil

*খাটি ঘি/ A2 Ghee

*খাটি মাখন/Butter

*ঘানিতে ভাঙা সরিষার তেল

 প্রোটিন (Protein)

* কুসুমযুক্ত ডিম

* তাজা মাশরুম

* মাছ (চর্বিযুক্ত মাছ, সামুদ্রিক মাছ)

* দেশি গরুর চর্বিযুক্ত মাংস পরিমিত মাত্রায়

* খাশির চর্বিযুক্ত মাংস পরিমিত মাত্রায়

* দেশি মুরগী

 শর্করা (Carbohydrates) :

* সকল প্রকার শাক

* সকল প্রকাশ সবজি

* সকল প্রকার সালাদ

 পানীয় (Quencher):

* পর্যাপ্ত পরিমান পানি

* Himalayan Pink Salt মিশ্রিত পানি সারাদিন

* কচি ডাবের পানি

* চিয়াসীড মিশ্রিত পানি

* Radigel-N পাউডার মিশ্রিত পানি

* হলুদের চা

উপরে উল্লেখিত এসব খাবার JK Lifestyle এর গাইডলাইন অনুযায়ী খেতে পারবেন। 

এবং যা যা খেতে পারবেন না, তা হলো:

* সকল ধরনের শস্য জাতীয় খাবার

* চিনি সহ অন্যান্য বেভারেজ

* দেশি ও বিদেশি ফল (আপাতত)

* সরাসরি দুধ ও দুধের সৃষ্টি কিছু

* সকল ধরনের ডাল

* ইন্ডাস্ট্রিয়াল তেল (সয়াবিন, সূর্যমুখী ও সকল ভেজিটেবল তেল আজীবন নিষিদ্ধ) 

* সকল ধরণের ফাস্টফুড ।

 ২) না খাওয়ার অভ্যাস (অটোফেজি): খাবারের পরেই যে বিষয়টির দিকে নজর দিতে হবে সেটা হলো না খাওয়ার অভ্যাস বা উপবাস। অটোফেজি শব্দের অর্থ হলো আত্মভক্ষণ বা নিজেকে খেয়ে ফেলা। শুনতে একটু অবাক লাগলেও এইটা আমাদের মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী একটা প্রক্রিয়া। গবেষণা অনুযায়ী আমাদের শরীরের ৩০% অতিরিক্ত প্রোটিন সঠিকভাবে সংশ্লেষ হতে পারেনা। ফলে এরা শরীরের মধ্যে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। তাই এদেরকে বিভিন্ন ভবে কাজে লাগানো কিংবা ধ্বংস করে ফেলার প্রক্রিয়া টাই হচ্ছে অটোফেজি যা কিছু সুনির্দিষ্ট উপায়ে না খেয়ে থাকলেই সম্ভব। যার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন JK Lifestyle এর মাধ্যমে সুস্পষ্ট। যেমনঃ

* ফ্যাট এডাপটেশন

* ফুল/ড্রাই ফাস্টিং

* ওয়াটার ফাস্টিং

* ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং

* ওয়ান মিল এ ডে

 ৩) ঘুমের অভ্যাসঃ ইংরেজি সেই প্রবাদ এর মতোই “Early to bed, early to rise. Makes a man healthy, wealthy and wise” ঘুমের প্রয়োজনীয়তা আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি। ।কিন্তু ভালো এবং উপকারী ঘুমের জন্যও কিছু নিয়ম ও নির্দেশিকা মেনে চলা জরুরি।

 ৪) দৈনন্দিন ব্যায়ামের অভ্যাসঃ শরীর চাঙ্গা ও সুঠাম দেহের অধিকারী হওয়ার জন্য ব্যায়ামের বিকল্প নেই। শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  কিন্তু স্থান, কাল, বয়স, পাত্রভেদে ব্যায়ামের পার্থক্য থাকা টা খুব স্বাভাবিক। এ কারণেই ব্যায়াম করার সময় সঠিক নির্দেশিকা বা গাইডলাইন মেনে চলা জরুরি, যাতে ব্যায়াম শারীরিক উন্নতির পাশাপাশি কোনো ক্ষতি না করে এবং সঠিক উপায়ে শরীরকে সুস্থ রাখে।

 ৫) মানসিক প্রশান্তি চর্চাঃ শরীর ও মনের ভালো থাকা একটি অপরটির পরিপূরক।শুধুমাত্র শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেই যথেষ্ট নয়, মানসিক শান্তি ও সুস্থতাও একইসাথে বজায় রাখা জরুরি।  মানসিক প্রশান্তি এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিশেষ কিছু অভ্যাস ও কৌশল প্রয়োজন, যা JK Lifestyle-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই জীবনধারায় এমন কিছু নির্দেশিকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা মানসিক প্রশান্তি আনতে সহায়ক, এবং একজন ব্যক্তিকে শারিরিকভাবে আরও  সুস্থ্য, সুখী ও পরিপূর্ণ জীবনযাপনে সাহায্য করে। 

উপসংহার
JK Lifestyle (জেকে লাইফ স্টাইল) কেবল একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের পরিকল্পনা নয়, বরং এটি একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ জীবন-যাত্রার পথে একটি পথনির্দেশক। এই লাইফস্টাইলের মাধ্যমে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে, সু-স্বাস্থ্যই আমাদের জীবনের মূল ভিত্তি।  সঠিকভাবে সুস্বাস্থ্যের দিকে নজর দিলে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সত্যিকার অর্থেই উন্নত করতে পারি।।

প্রতিটি ব্যক্তির জন্য বিশেষভাবে  প্রস্তুত করা এই গাইডলাইন আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। যারা প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের সঠিক মাপকাঠি খুঁজছেন, তাদের জন্য JK Lifestyle একটি কার্যকরী উপায়। যার কারণে জেকে লাইফ স্টাইল (JK Lifestyle) স্বাস্থ্যসচতেন মানুষের কাছে একটি আদর্শ জীবনধারা হয়ে উঠেছে। 

Related Posts

Shopping cart
Sign in

No account yet?

Start typing to see products you are looking for.
Shop
0 Wishlist
0 items Cart
My account