আঁশযুক্ত খাবার শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি অনেক রোগ প্রতিরোধ করে এবং সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। আঁশযুক্ত খাবার শরীরের জন্য কেন প্রয়োজন, তা জানাবো আজকের এই ব্লগে? আসুন বিস্তারিত জেনে নিই।
ওজন ও রক্তচাপ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এই দুটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে জটিলতার শেষ নেই। আঁশযুক্ত খাবারে ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
সারা বিশ্বে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় খাদ্যের আঁশের ওপর বেশ জোর দেওয়া হচ্ছে। বহু সমীক্ষার পর দেখা গেছে, খাদ্যের আঁশ দেহে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। পাকস্থলীতে খাদ্য বেশিক্ষণ থাকে। ফলে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়। ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
দেহের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে উচ্চ আঁশযুক্ত খাবারের ওপর নির্ভর করা যায়। অপরদিকে যাদের ওজন কম তাদের অনেক বেশি আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। রাসায়নিক আঁশের চেয়ে উদ্ভিজ্জ আঁশ খুব বেশি উপকারী যেমন-ভুসি ও ভুষিযুক্ত শস্য, ভুট্টা, শুকনো শিম, মটরশুঁটি, বরবটি, ডাল, ব্রাউন ব্রেড, লাল চাল, শুকনো ফল যেমন-বাদাম, খেজুর, খোরমা, যে কোনো ধরনের শাক, খোসাসহ আলু, তাজা ফল ইত্যাদি। আঁশজাতীয় খাবার সম্পর্কে টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়েরা ডা. রাথকে’র মতে গমের ভুসিই উত্তম।
যে কোনো আঁশ দেহে শোষিত হতে প্রচুর পানি প্রয়োজন হয়। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এক গ্রাম আঁশ শোষিত হতে পনেরো গ্রাম পানি প্রয়োজন। এ জন্য গমের রুটি খেলে পানি বেশি পান করতে হয়।
বেশ কয়েকটি রোগের প্রতিষেধক হিসাবে উচ্চ আঁশ কাজ করে। যেন-কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, কোলন ও রেকটামের ক্যানসার, হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস, পিত্তপাথুরি, ওজনাধিক্য, দন্তক্ষয় ইত্যাদি। উচ্চ আঁশ সুস্বাদু, সস্তা ও পুষ্টিকর। আমরা সাধারণত যে ভাত খাই তা খুবই সসৃণ। এ জন্য লাল চাল খুবই ভালো। এতে প্রচুর আঁশ থাকে এবং তা বেশ সুস্বাদু।
মূলজাতীয় সবজির মধ্যে গাজর, আলু, মিষ্টি আলু, মুলা, কচু এগুলোতে আঁশ আছে। ক্ষুধার্ত মানুষকে বেশ ভালোভাবে এগুলো পেট ভরাতে সাহায্য করে। শস্য ও ডাল হলো বীজজাতীয় খাবার। এগুলোতে প্রাকৃতিক আঁশ বেশি থাকে।
আঁশযুক্ত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি অনেক রোগ প্রতিরোধ করে এবং সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই আজই থেকে আপনার খাদ্যতালিকায় আঁশযুক্ত খাবার যোগ করুন এবং সুস্থ থাকুন।