ত্বকের ক্যান্সার সম্পর্কে যদিও আমরা কম সচেতন তবুও এটা অনেক সময় খুব মারাত্মক আকার ধারন করতে পারে।যদি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া না হয়।আমাদের এই অসচেতনতার কারনে হয়ে যেতে পারে অপূরনীয় ক্ষতি।
তাহলে কি জানতে পারি আপনি আপনার ত্বকের ক্যান্সারের ব্যাপারে কতটুকু সচেতন?
Table of Contents
Toggleত্বকের ক্যান্সার কি?
তাহলে চলুন যেনে নেওয়া যাক ত্বকের ক্যান্সার কি:
ত্বকের ক্যান্সার হলো ত্বকের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, যা সাধারণত সূর্যের অতিরিক্ত অতিবেগুনি (UV) রশ্মির প্রভাবে হয়ে থাকে । ত্বকের ক্যান্সার ধীরে ধীরে শরীরের অন্যান্য বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে যদি তা দ্রুত শনাক্ত করা না হয়।ফলে হয়ে যেতে পারে প্রানঘাতী।
এর মধ্যে আবার ত্বকের ক্যান্সারকে সাধারণত দুটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।যেমন:
নন-মেলানোমা ত্বকের ক্যান্সার (Non-melanoma skin cancer):
এই প্রকারের ক্যান্সার তুলনামূলকভাবে কম বিপজ্জনক কারন এটি ক্যান্সারের প্রকার অনুযায়ী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে না। আরও কিছু প্রকার যেমন: বেসাল সেল কার্সিনোমা এবং স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা এই দুই টা আলাদা শ্রেণির ক্যান্সার কিন্তু এই নন-মেলানোমা প্রকারের সাথে অন্তর্ভুক্ত।
মেলানোমা (Melanoma):
এই প্রকারের ক্যান্সার সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরনের ত্বকের ক্যান্সার, কারণ এটি ত্বকের গভীর স্তরে ছড়িয়ে পড়ে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দ্রুত ছড়িয়ে ফেলতে পারে।
মানুষের ত্বকের বিভিন্ন স্তর ও তারমধ্যে কেমন হয় ক্যান্সারের অবস্থান
আমাদের শরীরের ত্বক মূলত তিনটি স্তর নিয়ে গঠিত:
এপিডার্মিস (Epidermis):
এটি ত্বকের সবচেয়ে উপরের স্তর, যেখানে বেসাল সেল এবং স্কোয়ামাস সেল থাকে। এই স্তরে মেলানোসাইট নামক কোষও থাকে, যা ত্বকের রং তৈরি করে।
ডার্মিস (Dermis):
এটি ত্বকের মধ্যবর্তী স্তর, যেখানে রক্তনালী, স্নায়ু, এবং চুলের ফলিকল থাকে।
সাবকিউটেনিয়াস টিস্যু (Subcutaneous tissue):
এটি ত্বকের সবচেয়ে নিচের স্তর, যা চর্বি এবং সংযুক্ত টিস্যু নিয়ে গঠিত।
ত্বকের আক্রান্ত ক্যান্সারের লক্ষণগুলো এই লক্ষণগুলো নির্ণয় করলে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হতে পারে এবং এই প্রানঘাতি ক্যান্সারের হাত থেকে বাচানো যেতে পারে একটি প্রান। চলুন, তেমনি কিছু লক্ষণ সম্পর্কে আমরা জানি:
ত্বকে ক্ষত যা খুশকি বা খোসার মতো উঠতে থাকে
ত্বকের ক্যান্সার আক্রান্ত স্থানগুলোতে খোসা ওঠা বা ক্ষত থেকে নিয়মিত চামড়া উঠে যেতে পারে। এই ধরনের শুষ্ক ত্বক দেখলেই বুজা যায় কারণ এটি সহজে নিরাময় হয় না এবং হলেও পুনরায় ফিরে আসে।
দাগ বা দাগের আশেপাশে রঙের পরিবর্তন
ত্বকের ক্যান্সারের একটি অন্যতম লক্ষণ। দাগের আশেপাশে ত্বক লালচে, সাদা, বা কালো হয়ে যেতে পারে, যা অস্বাভাবিক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ত্বকের ক্যান্সার কখনও কখনও ত্বকের উপর একটি নীলচে বা বেগুনি রঙের শিরা বা রক্তনালীর মতো দেখাতে পারে। এটি সাধারণত মেলানোমার ক্ষেত্রে ঘটে এবং এমন লক্ষণ হলে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ক্যান্সার আক্রান্ত ত্বকে টিউমার
ক্যান্সার আক্রান্ত ত্বকে টিউমার স্থানে ছোট, মসৃণ এবং শক্ত টিউমার দেখা দিতে পারে, যাতে কোনো ব্যথার অনুভূতি হবে না, হলেও ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। এই ধরনের টিউমার সাধারণত মেরকেল সেল কার্সিনোমার নামক এই ধরনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে দেখা যায়।
চোখের আশেপাশের ত্বকে অস্বাভাবিক পরিবর্তনের
মাধ্যমে ক্যান্সারের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। চোখের আশেপাশে, বিশেষ করে পাতার উপরে বা নিচে ত্বক ফ্যাকাশে বা রুক্ষ হতে পারে এবং চোখের আকারও পরিবর্তন হতে পারে।
ত্বকে অস্বাভাবিক জ্বালাতন বা চুলকানো অনুভূতি
ত্বকের ক্যান্সারের একটি পূর্ব লক্ষণ হতে পারে, বিশেষ করে যখন এটি প্রতিনিয়ত ক্রমাগত বা নিয়মিতভাবে দেখা দেয় ভালো হয় আবার ফিরে আসে এবং তার সাথে দাগ বা ফোস্কা পরে যায়।
পরিশেষে বলা যায় যে, এইসব বিশেষ লক্ষণগুলো ত্বকের ক্যান্সার শনাক্ত করতে সহায়ক হতে পারে যদি এসব লক্ষণগুলোকে দেখলে দেরী না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যায় । তবে আমরা যখন বুজতে পারি ক্যান্সার হয়েছে তখন বেশী কিছু আর করার থাকেনা।তাই এরজন্য পূর্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়াটাই সবচেয়ে সঠিক হবে।