মধু নিয়ে কিছু কথা! – সবার জানা উচিৎ
১. অভিজ্ঞতা ও ল্যাবটেস্ট ছাড়া খাঁটি মধু চেনার পরিক্ষার কোনো মাধ্যম নেই। অনেক সময় ল্যাব টেস্টেও ভুল ফলাফল আসে।
২. লোকমুখে পরিক্ষার যত মাধ্যমের কথা শুনা যায় সবই ধারণানির্ভর। যেমন, চুন পরীক্ষা, আগুন পরীক্ষা, পিপড়া পরীক্ষা, পানি পরীক্ষা, কুকুর পরীক্ষা, ফ্রীজিং পরীক্ষা, গা গরম পরীক্ষা ও হাত গরম পরিক্ষা ইত্যাদি । এ সকল প্রচলিত ভুল পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে কখনও মধু খাটি-ভেজাল চেনা সম্ভব নয়।
৩. খাঁটি মধু পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো, মধুর পেছনের লোকটি সৎ, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও সচেতন হওয়া। অর্থাৎ সৎ-বিশ্বস্ত, অভিজ্ঞ ও সচেতন মধু বিক্রেতা থেকে মধু সংগ্রহ করা।
খেয়াল রাখতে হবে শুধু সৎ হলেই হবে না। সচেতন ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হতে হবে। কেননা, সচেতন ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন না হলে সৎ হওয়া সত্ত্বেও নিজের অজান্তেই নিজে প্রতারিত হয়ে হাজারও কাস্টমার প্রতারিত হতে পারে।
৪. সব মধুর গুনাগুণ যেমন এক নয় তেমনি সব মধুর বৈশিষ্ট্যও এক নয়। একেক মধুর একেক বৈশিষ্ট্য। যেমন, সুন্দরবনের চাকের খাঁটি মধুর মধ্যে উপরের দিক দিয়ে প্রচুর পরিমাণ গাদ জমে। সরিষা, ধনিয়া, লিচু, কালোজিরা ফুলের মধু জমে যায়। সুন্দরবনে মধুতে আদ্রর্তা কম থাকলে সুন্দরবনের চাকের মধুও জমে যেতে পারে। এগুলো মধুর বৈশিষ্ট্য। অনেক ভাই মনে করে মধু জমে গেলে মধু ভেজাল। এ ধারণা ঠিক নয়। বরং সরিষা, ধনিয়া, লিচু, কালোজিরা ফুলের মধু জমে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। আবার এই চার প্রকার মধুর মধ্যে সরিষা ফুলের মধু অনেক বেশি জমে যায় তারপর ধনিয়া তারপর লিচু তারপর কালোজিরা ফুলের মধু।
সুতরাং মধু জমে গেলে ভেজাল এ ধারণা ঠিক নয়। এখন কথা হলো, জমে যাওয়ার পর নরমাল করার পদ্ধতি কী? হ্যাঁ, তাহলে শুনুন, জমা মধুর বোয়ামটা রুদ্রে বা গরম করা পানিতে কিছুক্ষণ ধরে রাখলেই দেখবেন সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। তবে জমা মধু খাওয়ার অভ্যাস করাই ভালো। আমাদের দেশে জমা মধুর কদর না থাকলেও বিদেশীদের কাছে এর কদর অনেক বেশি। তাঁরা জমা মধুকে ক্রীমহানি বলে। এবং জমা মধু অন্য মধু থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনে খুব মজা করে খায়।
৫. মধু প্লাস্টিকের বোয়ামে রাখার চেয়ে কাঁচের বোয়ামে রাখা নিরাপদ। এতে মধুর গুনাগুণ দ্বীর্ঘদিন অক্ষুন্ন থাকার সাথে সাথে মধুর রং ও গন্ধ ঠিক থাকে। আর প্লাস্টিকের বোয়ামে রাখলে অবশ্যই ফুডগ্রেড বোয়ামে রাখতে হবে।
অন্যথায় অল্প কিছু দিনেই মধুর গুনাগুণ নষ্ট হয়ে যাবে।
মধু বেশি উষ্ণ বা বেশি ঠান্ডায় রাখা যাবে না। বরং মধু রাখতে হবে স্বাভাবিক জায়গায়। আর ভুলেও মধু ফ্রিজে রাখা যাবে না। এতে মধুর গুনাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে এ ভুলটাই অধিকাংশ মানুষ বেশি করে। ফ্রিজ হল মধুর নাম্বার ওয়ান শত্রু। যেসব মধু জমে যায় সেসব মধু ফ্রিজে রাখলে খুব দ্রুত জমে যাবে।
কিন্তু অধিকাংশ মানুষ ফ্রিজে মধু জমে যাওয়ার পর মধু ভেজাল হওয়ার জিকির করে। যা মুর্খতা বৈ কিছুই নয়।
#Repost#Honey#মধু#খাঁটিমধু#Purehoney#safefood#naturalremedies