অনেকেই আছে যারা জানেইনা যে তিনি আইবিএস এ আক্রান্ত হয়েছেন বা আইবিএস কি? সাধারণ অর্থে আইবিএস বলতে পেটের হজম সমস্যা বা মলত্যাগের সমস্যাকে বুঝায়। কিছু লক্ষন রয়েছে যা পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি আইবিএস এ আক্রান্ত কিনা। যেহেতু আইবিএস তেমন জটিল রোগ নয় সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র কিছু নিয়মকানুন এবং খাদ্যাভাস মেনে চললেই এর থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব।
আজকের এই ব্লগে আইবিএস আক্রান্ত রোগীর খাদ্য তালিকা সমূহ নিয়ে আলোচনা করবো।
আইবিএস এর জন্য খাদ্য তালিকাসমূহ
আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS) হলো অন্ত্রের বা পেটের একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা, যেখানে হজমপ্রক্রিয়ার বিভিন্ন অসুবিধা সৃষ্টি হয়।
আইবিএস (ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম) সাধারণত তিনটি ধরনের হয়ে থাকে:
IBS-D (Diarrhea-predominant IBS) : এই ধরনের আইবিএসে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার সমস্যা বেশি হয়। পেট ব্যথা এবং অস্বস্তির সাথে বারবার পায়খানা হতে পারে।
IBS-C (Constipation-predominant IBS): এই ধরনের আইবিএসে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়। এর ফলে পেট ফাঁপা ও অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে।
IBS-M (Mixed IBS): এই ধরনের আইবিএসে কখনও ডায়রিয়া, কখনও কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। অর্থাৎ ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দুটো সমস্যাই হয়ে থাকে।
এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে “IBS-U” (Unspecified IBS) রয়েছে যেখানে উপসর্গগুলো সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ধরনের সাথে মেলে না।
আইবিএস-এর ধরন চিহ্নিত করে উপযুক্ত চিকিৎসা এবং খাদ্যাভাস গ্রহণ করা উচিত।
নিম্নে আইবিএসের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
IBS-D (Diarrhea-predominant IBS)
আইবিএস জনিত ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে কিছু খাবার ও খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা উচিত। নিচে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো:
কম ফাইবার যুক্ত খাবার
আইবিএস জনিত ডায়রিয়ায় ফাইবারের পরিমাণ কম খাওয়া ভালো। বিশেষত সলিউবল ফাইবার যেমন ওটস, গাজর, আলু, এবং কলা পেটকে শান্ত রাখতে সহায়তা করে।
প্রোবায়োটিক খাবার
দই, কেফিরে থাকা প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ল্যাকটোজ-মুক্ত দুগ্ধজাত খাবার
দুধ বা দুধজাত খাবার অনেকের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ল্যাকটোজ-মুক্ত দুধ বা দই খাওয়া উচিত।
কম ফ্যাটযুক্ত খাবার
উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার আইবিএস এর উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই লো-ফ্যাট খাবার যেমন গ্রিল করা মাছ, সেদ্ধ মুরগি বা ভেজিটেবল স্যুপ খেতে পারেন।
হালকা শাকসবজি
পালং শাক, লেটুস এবং কুমড়ো জাতীয় সবজি ডায়রিয়ার উপসর্গ কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে এসব সবজি সেদ্ধ করে খাওয়া ভালো।
পানি পান করা
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডায়রিয়ার সময় শরীর থেকে পানি চলে যায়। তাই পানি, ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক বা স্যালাইন পান করতে হবে।
(Diarrhea-predominant IBS) আইবিএসের সমস্যার জন্য যা এড়িয়ে চলা উচিত
- ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং কার্বনেটেড ড্রিংকস।
- বেশি চিনি যুক্ত খাবার বা প্রক্রিয়াজাত খাবার
- চর্বিযুক্ত বা মসলাযুক্ত খাবার ইত্যাদি।
এই খাদ্যাভ্যাসগুলো মেনে চললে অনেকের জন্য ডায়রিয়ার উপসর্গ হ্রাস পেতে পারে। তবে আপনার শরীরের জন্য উপযুক্ত কি তা জানার জন্য ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
IBS-C (Constipation-predominant IBS)
আইবিএস জনিত কোষ্ঠকাঠিন্যের উপসর্গ কমাতে কিছু খাবার ও খাদ্যাভ্যাস সহায়ক হতে পারে।
নিচে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো:
অধিক ফাইবারযুক্ত খাবার
ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। ফলমূল, সবজি, ওটস, চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড, এবং গোটা শস্য (যেমন ব্রাউন রাইস, হোল-গ্রেন ব্রেড) ফাইবার সমৃদ্ধ। তবে ধীরে ধীরে ফাইবারের পরিমাণ বাড়ানো উচিত। যাতে পেটের অস্বস্তি বা গ্যাসের সমস্যা না হয়।
সলিউবল ফাইবার
সলিউবল ফাইবার পেটকে সহজে পরিষ্কার করতে সহায়ক। ওটস, আপেল, কমলালেবু, এবং গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সলিউবল ফাইবার।
প্রচুর পানি পান
কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা খুব জরুরি। দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন, বিশেষ করে ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়ার সময়।
প্রোবায়োটিক
দই এবং কেফিরে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ থাকে। যা অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে এবং পেটের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
প্ল্যান্ট-বেসড তেল
অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা অ্যাভোকাডো তেল অন্ত্র থেকে মল সহজে নির্গত করতে সহায়তা করে।
ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
ম্যাগনেসিয়াম অন্ত্রের গতি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। বাদাম, কুমড়ার বীজ, পালং শাক, এবং কলা ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস।
যা এড়িয়ে চলা উচিত
ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল
প্রক্রিয়াজাত খাবার বা অধিক চর্বিযুক্ত খাবার, যা কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতে পারে।
চিনি এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার
কিছু চিনি এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার রয়েছে, যেগুলো অন্ত্রের ব্যালেন্স নষ্ট করতে পারে। এ ধরনের খাদ্যাভ্যাস অনেকের জন্য উপকারী হতে পারে, তবে ব্যক্তিভেদে রোগের ধরন অনুযায়ী পার্থক্য থাকতে পারে। উপযুক্ত খাদ্য পরিকল্পনার জন্য ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।
IBS-M (Mixed IBS)
IBS-M (Mixed IBS) হলে উপসর্গ অনুযায়ী খাবার নির্বাচন করা জরুরি, কারণ এতে ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য উভয় সমস্যাই থাকে। নিচে কিছু সাধারণ খাবার ও খাদ্যাভ্যাস দেওয়া হলো যা IBS-M এর জন্য সহায়ক হতে পারে:
মাঝারি পরিমাণে ফাইবার
এমন খাবার বেছে নিন যা সলিউবল ফাইবার সমৃদ্ধ যেমন- ওটস, সেদ্ধ শাকসবজি, আপেল, কলা ইত্যাদি। সলিউবল ফাইবার অন্ত্রের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক। যা ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য উভয়ের জন্য উপকারী।
প্রোবায়োটিক
দই, কেফির এবং অন্যান্য প্রোবায়োটিক খাবার অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, যা IBS-M এর জন্য উপকারী।
কম ফ্যাটযুক্ত খাবার
চর্বিযুক্ত খাবার হজমের সমস্যা বাড়াতে পারে। তাই কম ফ্যাটযুক্ত খাবার যেমন গ্রিল করা মাছ, সেদ্ধ মুরগি, বা সবজি স্যুপ খেতে পারেন।
অ্যাভোকাডো ও অলিভ অয়েল
এই ধরনের স্বাস্থ্যকর চর্বি অন্ত্রের পেশিকে সাহায্য করে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। তবে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। কারণ অতিরিক্ত তেল ডায়রিয়া বাড়াতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি পান
পানি অন্ত্রে মলকে সহজে সারাতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়। দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
কম ফোডম্যাপ ডায়েট (Low FODMAP Diet)
কিছু খাবার যেমন পেঁয়াজ, রসুন, ব্রকলি, কফি ইত্যাদি আইবিএসের উপসর্গ বাড়াতে পারে। এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা ভালো হতে পারে।
যা এড়িয়ে চলা উচিত
মসলাযুক্ত খাবার
মসলা পেটের সমস্যা বাড়াতে পারে।
ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল
এগুলো অন্ত্রের জন্য উত্তেজক এবং ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতে পারে।
প্রক্রিয়াজাত ও মিষ্টিজাতীয় খাবার
অতিরিক্ত চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার আইবিএস এর উপসর্গ বাড়াতে পারে।
এই খাদ্যাভ্যাসগুলো মেনে চলা IBS-M এর উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। তবে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার আগে ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আইবিএস এর জন্য খাদ্যনিয়ন্ত্রনের কৌশল
আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের (IBS) ক্ষেত্রে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ সঠিক খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ এই রোগের উপসর্গ যেমন পেট ব্যথা, গ্যাস, ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্যকে নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। আইবিএসের উপসর্গগুলো ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন হতে পারে, তাই এর খাদ্য তালিকাও ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে কিছু সাধারণ নীতিমালা অনুসরণ করে আইবিএস আক্রান্তরা এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
১. অধিক ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ
ফাইবার অন্ত্রের পাচন প্রক্রিয়াকে সহজ করতে সাহায্য করে। তবে এই ফাইবারের উৎস এবং পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ।
ফলের মধ্যে : আপেল, নাশপাতি, কমলা এবং বেরিজাতীয় ফল যেমন স্ট্রবেরি ও ব্লুবেরি ইত্যাদি খাওয়া।
শাকসবজি : বিট, গাজর, ব্রকলি, এবং পালং শাক ইত্যাদি খাওয়া।
শস্যজাতীয় খাবার : ওটস, গোটা গমের রুটি, এবং বাদাম ইত্যাদি খাওয়া।
অধিক ফাইবারযুক্ত খাবার অতিরিক্ত না খেয়ে ধীরে ধীরে খাদ্য তালিকায় যোগ করুন। ফাইবারের মাত্রা বেশি হলে পেটফাঁপা এবং গ্যাস হতে পারে। যা আইবিএস রোগীদের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে।
২. কম ফোডম্যাপ (Low FODMAP) খাদ্য তালিকা অনুসরণ করা
ফোডম্যাপ (FODMAP) হলো এমন কিছু শর্করা, যা কিছু মানুষের জন্য হজমে অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। আইবিএস রোগীদের জন্য কম ফোডম্যাপযুক্ত খাবার খাওয়া অনেক উপকারী।
অধিক ফোডম্যাপ খাবার এড়িয়ে চলা : আপেল, নাশপাতি, রসুন, পেঁয়াজ, ব্রকলি, বাঁধাকপি ইত্যাদি।
কম ফোডম্যাপ খাবার গ্রহণ করা : কলা, আঙুর, স্ট্রবেরি, গাজর, কাঁচা শশা, এবং লেটুস। এছাড়া গ্লুটেনমুক্ত শস্যজাতীয় খাবার যেমন কুইনোয়া এবং চিয়া বীজ।
খাবারের ফোডম্যাপ কম থাকলে অন্ত্র সহজে হজম করতে পারে, যা আইবিএস উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে।
৩. প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
প্রোবায়োটিক বা স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে, যা হজমক্রিয়া এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
প্রোবায়োটিক দই: প্রোবায়োটিক দই অন্ত্রের জন্য ভালো। এটি অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়ায়।
ইয়োগার্ট এবং ফার্মেন্টেড খাবার : কিমচি, সয়ার্ক্রাউট এবং কেফির ফার্মেন্টেড খাবার হিসেবে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।
৪. প্রোটিনের উৎস নির্বাচন
আইবিএস আক্রান্ত রোগীদের অধিক ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন বেছে নেওয়া উচিত।
মুরগি, মাছ, এবং ডিমের সাদা অংশ: এই ধরনের প্রোটিন খাবার অন্ত্রের জন্য সহজপাচ্য এবং হজমে সহায়ক।
মাংস এবং ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা: চর্বিযুক্ত খাবার অন্ত্রে ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে। তাই অতিরিক্ত তেলযুক্ত এবং ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
৫. ল্যাকটোজ এবং গ্লুটেনমুক্ত খাদ্য
অনেক আইবিএস আক্রান্ত ব্যক্তিরা ল্যাকটোজ এবং গ্লুটেন সহ্য করতে পারেন না। তাই তাদের জন্য ল্যাকটোজ এবং গ্লুটেনমুক্ত খাদ্য নির্বাচন করা সঠিক হতে পারে।
ল্যাকটোজমুক্ত দুধ : ল্যাকটোজমুক্ত দুধ এবং ল্যাকটোজমুক্ত দুগ্ধজাত খাবার যেমন- পনির, দই গ্রহণ করা যেতে পারে।
গ্লুটেনমুক্ত শস্য : গম বা বার্লির পরিবর্তে কুইনোয়া, ব্রাউন রাইস বা গ্লুটেনমুক্ত ওটস খাওয়া যেতে পারে।
৬. কম পরিমাণে এবং বার বার খাবার খাওয়া
আইবিএস আক্রান্তদের জন্য কম পরিমাণে এবং বারবার খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশি পরিমাণ খাবার একসাথে খেলে অন্ত্রে চাপ সৃষ্টি হয়, যা আইবিএসের উপসর্গ বাড়াতে পারে।
কম পরিমাণে খাওয়া: দিনে ৫-৬ বার কম পরিমাণে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
খাবারের সময় নির্ধারণ করুন : প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৭. পর্যাপ্ত পানি পান
আইবিএস রোগীদের জন্য পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি অন্ত্রে খাদ্য হজম সহজ করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমে। প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
ডায়রিয়া হলে বেশি পানি পান করুন: ডায়রিয়ার সময় শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয়, তাই বেশি পানি পান করা উচিত।
৮. চা এবং ভেষজ পানীয় গ্রহণ
আদা চা এবং পিপারমিন্ট চা : এই চা অন্ত্রের ফোলাভাব এবং পেট ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
সবুজ চা : সবুজ চা অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৯. কী এড়িয়ে চলবেন
অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার : অতিরিক্ত চর্বি অন্ত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই অধিক চর্বিযুক্ত খাবার এবং ভাজাপোড়া, চিপস ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত।
ক্যাফেইন এবং সোডাযুক্ত পানীয় : ক্যাফেইন এবং সোডা অন্ত্রকে উত্তেজিত করতে পারে, যা আইবিএস এর উপসর্গ বাড়াতে পারে।
অতিরিক্ত চিনি এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার : অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবারও অন্ত্রের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
আইবিএসের ক্ষেত্রে খাদ্য নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে নিজের শরীরের প্রতি সংবেদনশীলতা বুঝে অর্থাৎ আপনি কোন ধরনের আইবিএসে আক্রান্ত সে অনুযায়ী এবং খাদ্যাভ্যাসের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে, ব্যক্তিগত খাদ্য তালিকা তৈরি করা উচিত। তাহলে এই খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কৌশলগুলো অনুসরণ করলে আইবিএসের উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখবে।