শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি দেখা দিলে এবং ত্বক ও চুলের যত্নে যে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্যাপসুল খাওয়া হয়, সেটাই সাধারণত ই-ক্যাপ (E-Cap) নামে পরিচিত। ১৯২২ সালে সর্বপ্রথম ভিটামিন ই আবিষ্কৃত হয়। বিশ্বব্যাপী সরকারি সংস্থাগুলোর নির্দেশনা অনুযায়ী একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক ৭-১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই খাওয়া উচিৎ। মার্কিন গবেষণা অনুযায়ী বয়স্কদের ভিটামিন ই খেতে বলা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। কখনও কখনও বয়স্কদের ১,০০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই গ্রহণ করার কথা বলা হয়ে থাকে। ই ক্যাপ এর প্রধান উপাদান ভিটামিন ই, যা একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। চুল বা ত্বকের কোনো সমস্যা দেখা দিলে অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ই ক্যাপ খাওয়া শুরু করেন। কিন্তু এই অভ্যাস নানা শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। তাই ই ক্যাপ নিয়ে যথেষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন।
আজকের ব্লগে আমরা ই ক্যাপ এর উপকারিতা এবং স্বাস্থ্যঝু্ঁকি বা অপকারিতা সম্পর্কে জানবো।
ই ক্যাপ এর কিছু উপকারিতা
১)ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি
ই-ক্যাপ এ বিদ্যমান ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং তরুণ্য বজায় থাকে।
২) কোষ পুনরুদ্ধার
ই-ক্যাপ শরীরের কোষ পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে পুনরুদ্ধার করে। যা ত্বক ও শরীরের সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে।
৩) চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি
চুলের যত্নেই মানুষ এটি বেশি খেয়ে থাকে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুলের গঠন শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। ফলে চুল পড়া কমে যায় ও চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
৪) বয়সের ছাপ দূর করতে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের চামড়া কুঁচকে যাওয়া ছাড়াও শরীরে বিভিন্ন ধরনের রেখা দেখা যায়। এইক্ষেত্রে ই ক্যাপ এন্টি এজিং ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ তেল যদি মালিশ করা যায় এর সাথে তাহলে ত্বকের সব ধরনের বলিরেখা দূর হয়ে যায়।
৫) ক্ষত নিরাময়ে
শরীরে বিভিন্ন আঘাতের ফলে সৃষ্ট ক্ষত নিরাময়ে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্যাপসুল দারুণ কার্যকরী। শরীরে কোন ক্ষত দেখা দিলে নিয়মিত সেবনে খুব দ্রুতই ক্ষতস্থান শুকাতে সাহায্য করে।
৬) হৃদরোগ প্রতিরোধ
ভিটামিন ই ধমনী এবং রক্তনালীর দেয়ালকে সুরক্ষিত রাখে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৭) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
ই ক্যাপ সেবনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন ই এর অভাবজনিত যত রোগ আছে সব প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৮) নখের ভঙ্গুরতা দূরীকরণ
সারাদিন বিভিন্ন ধরনের বাহ্যিক কাজের ফলে আমাদের নখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেকসময় ক্ষয় হয়ে যায়, ফেটে যায়। ই ক্যাপ এই ভঙ্গুরতা দূর করে নখ মজবুত করে। ই ক্যাপ এর তেল বেশি কার্যকরী।
৯) ক্ষতিকর বর্জ্য বের করা
ই-ক্যাপ শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করতে সহায়তা করে, যা পুরো শরীরের স্বাস্থ্য রক্ষায় কাজ করে।
১০) চোখের সুরক্ষায়
ভিটামিন ই ক্যাপসুল বা ই ক্যাপ রেটিনা সুরক্ষায় সাহায্য করে, ফলে চোখের কিছু রোগ যেমন- ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং ছানি পড়ার ঝুঁকি কমে।
অনিয়ন্ত্রিত ই ক্যাপ এর ব্যবহার এবং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ই ক্যাপ ব্যবহারে কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। ই ক্যাপের কিছু অপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নিই।
ই ক্যাপ এর অপকারিতা
১) লিভার এর সমস্যা
ই-ক্যাপের অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরে বিষাক্ত প্রভাব ফেলতে পারে। এটি লিভারের ক্ষতি করতে পারে।
২) পেটের সমস্যা
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ই-ক্যাপ ব্যবহারের ফলে বমি, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩) অ্যালার্জির সম্ভাবনা
কিছু মানুষের ত্বকে ই-ক্যাপ ব্যবহার করলে অ্যালার্জি, চুলকানি, র্যাশ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয় । যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য আরো বেশি।
৪) রক্ত জমাট বাঁধা
ই-ক্যাপ রক্তের ঘনত্ব কমাতে সহায়ক হলেও অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিশেষ করে যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ সেবন করেন তাদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ।
৫) গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী নারীদের জন্য ঝুঁকি
ই-ক্যাপ সেবন গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী নারীদের জন্য উপযুক্ত নয়। গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এটি ভ্রূণের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ই ক্যাপ সেবন কিংবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো না। বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় ভিটামিন ই গ্রহণের তারতম্য রয়েছে। সঠিক নিয়ম মেনে ই-ক্যাপ গ্রহণ করুন, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন।
শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি দেখা দিলে ই-ক্যাপ খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তবে যাদের ই ক্যাপে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তারা এটি এড়িয়ে চলবেন বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। তাদের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ভাবে যে সকল খাদ্যের মধ্যে ভিটামিন ই পাওয়া যায় সেই সকল খাদ্য নিয়মিত গ্রহন করতে পারেন, যেমনঃ বাদাম, আখরেট, সুর্যমুখী বীজ, অ্যাভোকাডো , কিশমিশ, কুমড়ো বড়ি, ভার্জিন গ্রেড নারিকেল তেল, চিয়া সিড ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন।
-
Sale Product on saleChia Seed – চিয়া সিড350.00৳ – 1,000.00৳
-
Sale Product on saleভার্জিন গ্রেড নারকেল তেল750.00৳ – 1,500.00৳